Claim- ফ্রান্সের দাঙ্গার ঘটনায় ফরাসি পুলিশের আত্মসমর্পণ
Fact- পুলিশের আত্মসমর্পণের ভিডিওটি ২০২০ সালের, সাম্প্রতিক দাঙ্গার নয়
‘ফ্রান্সের দাঙ্গার ঘটনায় ফরাসি পুলিশের আত্মসমর্পণ’ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয় দেখুন এখানে ও এখানে। ভিডিওতে দেখা যায় একদল পুলিশ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে একে একে তাদের কাছে থাকা হ্যান্ডকাফ গুলো মাটিতে ছুড়ে দিচ্ছে। গত ২৭ই জুন ফ্রান্স পুলিশের একজন কর্মকর্তা নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভুত এক কিশোরকে গুলি করলে কিশোরটির মৃত্যু হয়। এর জের ধরে সমগ্র ফ্রান্সের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ শুরু হয় যা পরবর্তীতে দাঙ্গায় রূপ নেয়। নিচে ভাইরাল ভিডিওটির একটি স্ক্রিনশট দেখুন-
নিউজচেকার-বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে দাবিটি মিথ্যা।
Fact check/ Verification
গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ এর সাহায্যে অনুসন্ধান করে আমরা টার্কিশ নিউজ চ্যানেল টি আর টি ওয়ার্ল্ড এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে একটি ইউটিউব শর্ট ও টুইটারে একই ভিডিওর সন্ধান পাই। দু’টি ভিডিও-ই ২০২০ সালে ফ্রান্স পুলিশের এক প্রতিবাদের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা খুজে পাওয়া যায়। জানা যায় ২০২০ সালের জুন মাসে ফরাসি পুলিশেরা চোকহোল্ড নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে এই কাজ করে।
ক্লিমেন্ট ল্যানোট নামের এক জার্নালিস্ট এর টুইটার একাউন্টে ২০২০ সালের ১২ই জুন তারিখে একই ভিডিওর সন্ধান পাওয়া যায়। ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, ‘Handcuffs thrown to the ground in front of the Bobigny police headquarters. The angry police believe they no longer have the means to arrest them correctly following Castaner’s announcements. (গুগল ট্রান্সলেটর দ্বারা ফরাসি থেকে অনুদিত)। এর কাছাকাছি অর্থ এই দাঁড়ায় যে, ‘ববিগনি পুলিশ হেডকোয়ার্টারের সামনে পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের হ্যান্ডকাফ মাটিতে ছুড়ে প্রতিবাদ করছে। ফরাসি পুলিশেরা মনে করেন যে ক্যাস্টানারের গ্রেফতার করার পদ্ধতি নিয়ে নতুন ঘোষণার পর তাদের কাছে আসামীকে গ্রেফতারের কোন উপায় বাকি রইলো না।’
’
প্রতিবাদের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমরা কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনুসন্ধান করি। এতে করে বেশ কিছু প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদন দেখুন এখানে- ইউরোনিউজ, ফ্রান্স২৪, টাইম, রয়টার্স। প্রতিবেদন গুলো থেকে জানা যায়, আমেরিকায় পুলিশ কর্মকর্তা দ্বারা কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনার পর ফ্রান্সের ইন্টেরিওর মিনিস্টার ক্রিস্টোফার ক্যাস্টানার ঘোষণা দেন যে, গ্রেফতার করার সময় পুলিশেরা চোকহল্ড পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারবে না।’ প্রতিবেদন দেখুন এখানে- দ্যা গার্ডিয়ান। এতে করে ফ্রান্স জুড়ে ফরাসি পুলিশেরা প্রতিবাদ করে। পরবর্তীতে এই নিষেধাজ্ঞা আবার উঠিয়ে নেয়া হয়।
উল্লেখ্য গত ২৭ই জুন ফরাসি পেট্রলিং পুলিশ দ্বারা আলজেরিয়ান বংশোধভুত ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরের মৃত্যু হয়। প্রতিবেদন দেখুন এখানে- বিবিসি, দ্যা গার্ডিয়ান ও আল-জাজিরা। এই ঘটনার পরপরই দেশ জুড়ে জনগণ প্রতিবাদ গড়ে তোলে যা পরে দাঙ্গায় রূপ নেয়। এই ঘটনাইয় সরকারও কিছুটা চাপে পড়ে যায়।
Conclusion
সুতরাং ভাইরাল ভিডিওটি ফ্রান্সে হওয়া সাম্প্রতিক দাঙ্গার নয়।
Result: False
Our Sources:
ইউটিউব শর্ট ও টুইটারে
দ্যা গার্ডিয়ান
বিবিসি, দ্যা গার্ডিয়ান ও আল-জাজিরা
সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান [email protected]। এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us – ফর্মের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন।