Claim– ত্রাণের বিনিময়ে হিন্দু ছেলের তাবিজ খুলে নিলো একজন ইসলামিস্ট।
Fact– তাবিজ খুলে নেয়া ছেলেটি হিন্দু নয়, নিশ্চিত করেছেন স্বয়ং সেই ব্যক্তি।
ত্রাণের বিনিময়ে একটি হিন্দু ছেলের গলা থেকে তাবিজ খুলে নিলো একজন ইসলামিস্ট দাবিতে সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়৷ ভিডিওতে দেখা যায় একজন মুসলমান ব্যক্তি ত্রাণ দিয়ে একটি ছেলের গলা থেকে একটি কড়ি/তাবিজ খুলে নিচ্ছে। এসব পড়া শিরকি কাজ বলতে শুনা যায় উক্ত ব্যক্তিকে। ভিডিওতে এটাও লেখা আছে, ‘নোয়াখালি ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে এক ছেলেকে শিরক মুক্ত করা হলো ‘ ভাইরাল পোস্টগুলো দেখুন এখানে।
নিউজচেকার যাচাই করে দেখেছে দাবিটি মিথ্যা।
Fact check/Verification
ত্রাণের বিনিময়ে হিন্দু ছেলের গলা থেকে তাবিজ খুলে নেয়ার দাবিটি সত্যতা যাচাই করতে আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের নিশ্চিত করেন ভিডিওতে থাকা ত্রাণ নেয়া ছেলেটি হিন্দু নয়।
সম্প্রতি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডম্বুর গেইট খুলে দেয়ার দরুণ বাংলাদেশের দক্ষিণের ফেনি, নোয়াখালি, চিটাগং ও কুমিল্লা অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন এনজিও গ্রুপ/ফাউন্ডেশন গুলো।
ভাইরাল ভিডিওটি সম্প্রতি বন্যার্ত অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণেরই একটি ঘটনা।
ভিডিওটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে আমরা তাওহীদ একাডেমি ও ইসলামিক সেন্টারের ফেসবুক পেজে একই ভিডিওর সন্ধান পাই। অতঃপর তাওহীদ একাডেমি ও ইসলামিক সেন্টারের প্রিন্সিপালের সাথে আমরা যোগাযোগ করি।
তিনি আমাদের জানান উক্ত ভিডিওটি তাদেরই ফাউন্ডেশনের। ভিডিওটি নোয়াখালির সেনবাগের কবিরহাটের চর আলগী গ্রামের। সেদিন ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে দায়িত্বে ছিলেন তাওহীদ একাডেমি ও ইসলামিক সেন্টারের শিক্ষক শায়েখ আব্দুল মালেক মিয়াজী।
ভিডিওতে শোনা যায় এক ব্যক্তি বলছে ‘আল্লাহ তোমাকে সওয়াব দিবে’। উক্ত শায়েখ বলেন, ‘আল্লাহ সুবহান তা’আলা কবুল করুক এগুলা আর,’ পরক্ষণেই ছেলেটি বলে উঠে, ‘আম্মা চিল্লাবে।’ উত্তরে উপস্থিত ব্যক্তি ও শায়েখ বলেন, ‘না চিল্লাবেন না। দোয়া করে দিসি। বলবা হুজুররা আসছিলো, দোয়া করে দিসে।’
আমরা আব্দুল মালেক মিয়াজির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আমাদের জানান উক্ত ভিডিওতে থাকা ছেলেটি একজন মুসলিম পরিবারের সন্তান। তিনি আমাদের আরও জানান, তাবিজ/কড়ি ধারণ করা ইসলাম পরিপন্থী হওয়ায় তিনি উক্ত ত্রাণ কর্মসূচীতে এই কাজটি করেছেন।
এছাড়াও ত্রাণ কর্মসূচীতে অন্যান্য আলেমদেরও একই কাজ করতে দেখা যায়। এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে ও এখানে।
তাবিজ/কড়ি পড়া ইসলাম আওমর্থন করে কি না?
ইসলাম এর পরিভাষায় শিরক হলো আল্লাহর উপাসনায় কাউকে শরীক করা তথা আল্লাহ তা’আলা’র সমকক্ষ মনে করা। অর্থাৎ, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো উপর ঈমান/বিশ্বাস স্থাপন করা। আল কোরানের একাধিক আয়াতে শিরক বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। ইসলাম তাবিজ/কবজ বা অন্য কিছু ধারণ করাকে সমর্থন করে কি না তা নিয়ে ইসলামিক স্কলারদের মধ্যে একাধিক মতবাদ আছে। কেউ কেউ তাবিজ/কব্জকে ধারণ করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ মনে করেন। আবার কেউ কেউ তাবিজ/কবজ যদি কোরানের আয়াত দিয়ে লিখা হয়ে থাকে তাহলে তা পড়তে সমর্থন করেন। দেখুন এখানে।
কোন হিন্দু ধর্মাবলম্বীর সাথেও একই ধরণের কাজ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর কারোর সাথেই এরকম কোন কাজ করা হয় নি। এবং উক্ত অঞ্চলে সংখ্যালঘু লোকদের পরিমাণ মোটামুটি ছিলো।
Conclusion
অতএব, ত্রাণের বিনিময়ে তাবিজ খুলে নেয়া ছেলেটি হিন্দু দাবিটি সত্য নয়।
Result: False
Our Sources:
Newschecker’s Own Analysis
সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান [email protected] অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে। আমাদের whatsapp চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এখানে ক্লিক করে।এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us -র মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন ও ফর্ম ভরতে পারেন।