Claim- চাঁদাবাজির ভিডিও ধারণ করাই কাল হয়ে ওঠে সাংবাদিক তুহিনের। কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে।
Fact- চাঁদাবাজির ভিডিও নয় বরং ছিনতাইয়ের ভিডিও ধারণ করায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে।
গত ৭ই আগস্ট গাজিপুর চৌরাস্তার চান্দনা এলাকায় এক সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনা ঘটে। দৈনিক আজকের কাগজ এর সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পরপরই ‘চাদাবাজির ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিক তুহিনকে হত্যা করা হয়’’ দাবিটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে। ভিডিওগুলো দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘটনাটিকে সম্প্রতি বিএনপির চাদাবাজির সাথেও সম্পৃক্ত বলে দাবি করা হচ্ছে।
কার্টেসিঃ টিকটক/ইউজার
কার্টেসিঃ টিকটক/ইউজার
কার্টেসিঃ টিকটক/ইউজার
নিউজচেকার যাচাই করে দেখেছে দাবিটি মিথ্যা।
Fact check/ Verification:
চাঁদাবাজি ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিক তুহিনকে হত্যা’ ভাইরাল দাবিটির সত্যতা নিশ্চিত করতে প্রাথমিকভাবে আমরা ঘটনার সাথে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করি।
প্রতিবেদনগুলো থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় সাংবাদিক তুহিন হত্যার ঘটনার নেপথ্যে চাদাবাজির ভিডিও ধারণ নয় বরং ছিনতাইকারীদের হামলার একটি ভিডিও ধারণ করাই মুল কারণ।
গত ৭ই আগস্ট গাজিপুর চৌরাস্তার চান্দনা এলাকায় দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যা করা হয়। ঘটনাটি সংঘটিত হওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পরে। দেখুন এখানে ও এখানে।
ঘটনার খবর পেয়ে গাজিপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় ও সাংবাদিক তুহিনের মরদেহ সংগ্রহ করে। গাজিপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার রবিউল ইসলাম জানান, ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ও তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌছান। সেখানে পৌছানোর পর তারা সাংবাদিক তুহিনকে মৃত হিসেবে পান। ঘটনাস্থলের আশেপাশে অনুসন্ধান করে পুলিশের হাতে একটি সিসিটিভি ফুটেজ আসে। সিসিটিভি ফুটেযে দেখা যায়, একজন নারী একজন পুরুষের সাথে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পরে। এক পর্যায়ে পুরুষটি উক্ত নারীকে আঘাত করে। আঘাত করার সঙ্গে সঙ্গে সেই নারীর পক্ষের হয়ে কয়েকজন দুর্বৃত্ত হাতে দেশীয় অস্ত্রসহ উক্ত ব্যক্তিকে উপর্যুপরি আঘাত করে।’
তিনি আরও জানান, ঘটনার এক পর্যায়ে সেই দুর্বৃত্তরা তুহিনকে ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে দেখে ফেলে। এতে করে তারা সাংবাদিক তুহিনকে চার্জ করে এবং ভিডিও ডিলিট করতে বলে। কিন্তু সাংবাদিক তুহিন রাজি না হওয়ায় তারা তুহিনকে কুপিয়ে হত্যা করে।
উপ-পুলিশ কমিশনার রবিউল ইসলাম এর বর্ণনা দেখুন এখানে- দৈনিক ইত্তেফাক ও ডেইলি সান বাংলা।
অর্থাৎ, একটি নারীঘটিত হামলার ভিডিও ধারণকে কেন্দে করেই সাংবাদিক তুহিনকে হত্যা করা হয়।
এই সংক্রান্ত আরও প্রতিবেদন দেখুন এখানে- বিডিনিউজ২৪ ও দেশ টিভি।
এছাড়াও, সাংবাদিক তুহিনের ফেসবুক প্রোফাইল অনুসন্ধান করে কোন প্রকারের চাদাবাজির ভিডিও লাইভ/পোস্ট এর সন্ধান মেলে নি।
আসামিদের ইতিমধ্যে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং একজন স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন আদালতে। দেখুন এখানে- ইউএনবি ও যমুনা টিভি।
অর্থাৎ, সাংবাদিক তুহিন হত্যার ঘটনার কারণ চাঁদাবাজির কোন ভিডিও ধারণ করা নয়।
Conclusion
অতএব, চাঁদাবাজির ভিডিও ধারন করাই কাল হলো সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে গত ৭ই আগস্ট একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা সাংবাদিক তুহিম তার মোবাইলে ধারণ করলে দুর্বৃত্তরা তার উপর হামলা করে। সেই হামলায় তাকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনার সাথে চাঁদাবাজি বা কোন রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা নেই।
Result: False
Our Sources:
পুলিশের বর্ণনা- দৈনিক ইত্তেফাক ও ডেইলি সান বাংলা।