Claim- একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সরকারি কর্মকর্তার উপর স্যাংশন আরোপ
Fact- ভিসা নীতি ও স্যাংশন আরোপের এসব দাবিগুলো ভিত্তিহীন
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা ও একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের উপর স্যাংশনের দাবিতে একাধিক ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির দরুন বহিঃবিশ্বের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপোড়েনের দরুন স্যাংশন ও ভিসা নীতি ব্যাপক আলোচনায় আসছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে নানাবিধ উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বের উপর স্যাংশনের দাবিতে বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে। ভিডিওগুলো দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে। ভাইরাল পোস্টগুলোর স্ক্রিনশট দেখুন এখানে-
নিউজচেকার-বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে দাবিগুলো মিথ্যা।
Factcheck/Verification
গুগল কি-ওয়ার্ড সার্চ এর সাহায্যে অনুসন্ধান করে টিকটকে ভাইরাল হওয়া একাধিক ব্যক্তিত্বের উপর স্যাংশনের কোন তালিকা বা তথ্য প্রমাণ মেলেনি। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও তার কোন সুনির্দিষ্ট তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ করে নি। এই সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলোতেও সুনির্দিষ্ট কোন নামের তালিকা পাওয়া যায় নি। কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে- দ্যা ডেইলি স্টার, ঢাকা ট্রিবিউন।
প্রথমত, টিকটকে সম্প্রতি ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যে ভিডিওটি (এখানে ও এখানে) ভাইরাল হয় তাতে দৈনিক প্রথম আলোর একটি নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করা হয়। ফটোকার্ডটিতে দাবি করা হয় বিরোধী দলের চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও এক্টিভিস্ট পিনাকি ভট্টাচার্যের উপর আমেরিকা ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে পিটার হাস, বাংলাদেশে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত, বিবৃত দিয়েছেন। নিউজচেকারের পক্ষ থেকে প্রথম আলো’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা ফটোকার্ডটিকে নকল বলে নিশ্চিত করেন এবং এই সংক্রান্ত কোন প্রতিবেদন প্রথম আলো করেনি বলেও জানায়। এছাড়াও, ইউএস এম্বাসি ঢাকা’র টুইটার বা ফেসবুক পেইজেও এমন কোন তথ্য পাওয়া যায় নি।
অপর একটি ভিডিওতে দেখা যায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর, বিএনপির তারেক রহমান, রুহুল কবির রিজভি ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছবি দিয়ে দাবি করা হচ্ছে যে, মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ভিপি নুর সহ বিরোধী শিবিরের ১০ নেতা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধায় ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ২২ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্ট্মেন্টের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার, বাংলাদেশিদের উপর আরোপিত ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ শুরু করতে যাচ্ছে বলে একটি বিবৃতি দেন। প্রতিবেদন দেখুন-এখানে, এখানে ও এখানে।
ইউএস এম্বাসি ঢাকা’র অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়। তবে বিজ্ঞপ্তির কোথাও ভিসা নিষেধাজ্ঞায় পড়া ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করা হয় নি।
Daily Star-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড লু এর কাছে কে বা কারা ভিসা নিষেধাজ্ঞার নীতিতে পড়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি আমরা কোন নাম প্রকাশ করবো না।
একইভাবে টিকটকে অন্য একটি ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে ডিবি হারুন সহ পুলিশের ৮ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মুলত এসব তথ্যের কোনটিরই কোন ভিত্তি নেই। কারণ গত মে মাসে ঘোষণা দেয়া ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতির আওতায় কে বা কারা থাকছে তা কোনভাবেই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ করবে না বলে জানিয়ে আসছে।
অপরদিকে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টেও এমপি অ্যাবিগেইল বয়েড বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ম্যাগ্নেটস্কি স্টাইল স্যাংশনের দাবি করেন। তবে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে কোন প্রকারের স্যাংশনের ঘোষণা এখনো আসে নি। এই বিষয়টিকে নিয়েও টিকটকে এক ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে যে অস্ট্রেলিয়া আবারও বাংলাদেশের উপর স্যাংশন দিয়েছে। রীতিমত এই দাবিটিও বাকি সকল দাবির মত ভিত্তিহীন।
বাংলাদেশের উপর আমেরিকার ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতিটি ২০২৩ সালের মে মাসে ঘোষণা করা হয়। এই নীতির আওতায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য দায়ী বা জড়িত ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণার পর, বাংলাদেশি কর্মকর্তারা এটিকে “অগ্রহণযোগ্য” বলে নিন্দা করেন। তারা দাবি করেন যে, এই নীতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমেরিকার হস্তক্ষেপ।
গত ২২শে সেপ্টেম্বর, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি প্রয়োগ শুরু করে। তবে, কে বা কারা এই নীতির আওতায় পড়েছে তা এখনও জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়নি।
Conclusion
অতএব, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে ভাইরাল হওয়া একাধিক ব্যক্তিত্বের উপর স্যাংশনের দাবি মিথ্যা। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও তার কোন সুনির্দিষ্ট তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ করে নি।
Result: False
Our Sources:
দ্যা ডেইলি স্টার, ঢাকা ট্রিবিউন, ইউএস এম্বাসি ডোনাল্ড লু সাক্ষাৎকার, ম্যাথু মিলারের বিবৃতি
সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান [email protected] অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে। আমাদের whatsapp চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এখানে ক্লিক করে।এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us -র মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন ও ফর্ম ভরতে পারেন।