Wednesday, June 4, 2025

Fact Check

Fact check: ছাত্রদল সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান এর ডিপফেক ভিডিও ছড়ালো ফেসবুকে 

banner_image

Claim- ছাত্রদল সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান স্বীকার করেছেন তার বয়স ৪৭।
Fact- রাশেদ ইকবাল খানের ভিডিওটি এ.আই জেনারেটেড।

ছাত্রদল সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান এর বয়স ৪৭ বছর’ দাবিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয় দেখুন এখানে, এখানে, এখানে। গত ৮ই আগস্ট বিএনপি তাদের ছাত্রদলের নতুন সভাপতি হিসেবে রাশেদ ইকবাল খানের নাম ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে নতুন সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান এর মুখমন্ডল ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে একটি বক্তব্য প্রচার করা হয়, ‘আমি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নতুন সভাপতি রাশেদ ইকবাল। আমার বয়স মাত্র ৪৭ বছর। আমার বড় ছেলে তাউহিদ, ওর বয়স ২৭ বছর। তাওহিদের আবার ৮ বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। আমি জুবাইদা রহমানের ক্লাসমেট। প্রিয় ছাত্রসমাজ, সবাই আমাকে চাচাজী বা দাদা বলে ডাকবেন, এবং সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’  ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনশট দেখুন  নিচেনিউজচেকার-বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে যে, দাবিটি মিথ্যা। 

Fact check/Verification

গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ এর সাহায্যে সর্বপ্রথম ভিডিওতে ব্যবহৃত ইমেজটির উৎস খুজতে গিয়ে আমরা ছাত্রদল সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানের একটি ফেসবুক পোস্টে প্রকৃত ছবি খুজে পাই। দেখুন এখানে। 

এ আই ভিডিওতে ব্যবহৃত ছবির মূল পোস্ত
কার্টেসিঃ ফেসবুক/ইউজার

আমরা যেভাবে খুজে পেলামঃ

  • রিভার্স ইমেজ সার্চঃ ভাইরাল ভিডিওটি একটি রিভার্স ইমেজ সার্চ এর সাহায্যে ছবির মুল উৎস খুজতে গিয়ে আমরা রাশেদ ইকবাল খান নামের একটি ফেসবুক আই ডি (আনভেরিফায়েড) তে২১শে ফেব্রুয়ারি তারিখে পোস্ট করা সাদৃশ্যপূর্ণ একটি ছবি খুজে পাই। 
  • ওয়াটারমার্ক কি-ওয়ার্ড সার্চঃ ভাইরাল ভিডিওটিতে D-ID লেখা একটি ওয়াটার মার্ক পাওয়া যায়। কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দেখা যায় এটি একটি উন্মুক্ত এ আই ভিত্তিক ভিডিও তৈরির সাইট যেখানে যেকোন ছবি দিয়ে ছোট ছোট দৈর্ঘ্যের ভিডিও বানানো যায়। 
  • নির্ভরযোগ্য উৎসের সাথে বক্তব্যের তুলনাঃ ৮ই আগস্ট রাশেদের সভাপতিত্ব ঘোষণা করার পর বাংলা ভিশনকে ১০ই আগস্ট একটি সাক্ষাৎকার দেন। সাক্ষাৎকারে নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতির বয়স বিষয়টি সামনে আসলে এ নিয়ে রাশেদ বলেন, তিনি ২০০৩ সালে এস এস সি ও ২০০৫ সালে এইচ এস সি পাস করেন। প্রথমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ও এক বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই ইতিহাসে স্নাতক করেন। কর্মীদের অভিযোগ ‘০৩ ও ০৫ সালে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি দিলে বয়স ৪৭ হয় কীভাবে। এছাড়াও প্রতিবেদনের এক অংশে রাশেদ ইকবাল খান এর জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি পাওয়া যায় যেখানে তার জন্ম সাল ১ ডিসেম্বর, ১৯৮৭ লেখা ছিলো। সে হিসেবে তার বয়স ৩৬ বছর হয়ে থাকে। 
রাশেদ ইকবাল খানের জাতীয় পরিচয়পত্র
কার্টেসিঃ ইন্টারনেট/বাংলাভিশন

ডিপফেইক কী 

ডিপফেইক  কথাটি ডিপ লার্নিং ও ফেইক শব্দ দুটির সংমিশ্রণে তৈরি হয়েছে। এটিকে সিন্থেটিক মিডিয়াও বলা হয়। এই প্রযুক্তিতে একজন ব্যক্তির আদলে কৃত্রিম ছবি তৈরি করে সহজেই তাতে নানা কাটাছেড়া করা যায়। ডিপফেইক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিনোদন থেকে শুরু করে গুজব, অপতথ্য ছড়ানো এমনকি প্রতারণার কাজও করা হয়ে থাকে। 

ভাইরাল ভিডিওর ব্যবচ্ছেদঃ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল এ ভিডিওটি, আপনি যদি লক্ষ্য করেন, বুঝতে পারবেন এটি আসলে সত্য নয়। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন? আসুন কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য করা যাক যেগুলোর সাহায্যে আমরা এ ধরণের ভিডিও শনাক্ত করতে পারব। 
১. আওয়াজঃ ভিডিওটির পেছনে থাকা কণ্ঠস্বর খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন এটি গুগলের টেক্সট টু স্পিচ ইঞ্জিনের মত করে শব্দ উচ্চারণ করছে, অনেকটা রোবটিক। বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য, কথারত ব্যক্তির মুখের অভিব্যক্তি
ও সত্যিকার অর্থে শব্দগুলোর উচ্চারণের অভিব্যক্তি ভিন্ন। এছাড়াও কন্ঠস্বর text to speech generated কি না টা যাচাই করতে আপনারা এই লিংকে গিয়ে ভয়েসটি আপলোড করে ফ্রিতে যাচাই করতে পারবেন। এছাড়াও দেখবেন, এখানে, যে ভয়েসটি বাজছে, সেটিতে কোন ইকো অর্থাৎ প্রতিধ্বনি নেই। এটা একমাত্র তখনই সম্ভব যখন ব্যক্তির সামনে কোন নয়েস ক্যান্সেলেশন মাইক থাকে, কিন্তু বক্তার গায়ে বা আশেপাশে এরকম কোন মাইক দেখা যাচ্ছে না।  ২. পরিপার্শ্বঃ ভিডিওতে কথা বলা ব্যক্তির মুখমন্ডল বাদে অবশিষ্ট শরীর ও তার পেছনের ব্যক্তিদের দিকে তাকালে বুঝতে পারবেন যে তারা সম্পূর্ণ static অর্থাৎ স্থির অবস্থায় আছে, যা সাধারণত হওয়ার কথা না। 
৩. মুখের অভিব্যক্তিঃ আপনি খেয়াল করে দেখতে পারবেন যে ভিডিওতে কথারত ব্যক্তির ঠোটের নড়াচড়া একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্ন মেনে চলছে।  যেভাবে একজন সাধারণ ব্যক্তির কথা বলার সময় মুখের পেশি, চোখের মনির নড়াচড়া করার কথা সেভাবে কিছুই নড়ছে না।.
৪. ওভারলেঃ ভিডিওটির পেছনের ব্যক্তিদের সাথে বক্তার সামনের অংশটি লক্ষ্য করলে আপনারা বুঝতে পারবেন যে দুটো আলাদা লেয়ারে বিভক্ত, এবং লেয়ার দুটোর মাঝে স্পষ্ট edge বা ধার বোঝা যায়। এটা থেকে প্রতীয়মান হয় যে ভিডিওটি দুটো লেয়ারে এডিট করে খুবই অদক্ষ ভাবে merge করা হয়েছে।
৫. আলোঃ সাধারণত একজন মানুষ যখন কথা বলার সময় নড়াচড়া করে তখন বিভিন্ন দিক থেকে আসা আলোর কারণে ক্যামেরার চেহারাতে একেক সময় একেক এক্সপোজার আসার কথা যার ফলে মুখের একেক অংশ একেক সময় বিভিন্ন মাত্রায় উজ্জ্বল হওয়ার কথা। কিন্তু ভিডিওতে এমনটি দেখা যায় না, বরং মনে হয় যেন একপাশ থেকে আসছে আলো। 
সর্বোপরী এটি একটি ডিপফেক ভিডিও, যা খুবই অপটুভাবে তৈরী করা। কোন ভিডিও ডিপফেক কিনা, তা যাচাই করার জন্য আপনারা এই লিংকে যেতে পারেন। এছাড়াও এ.আই ভিডিও বা ডিপফেইক শনাক্তকরণে কিছু বিবেচ্য বিষয় নিয়ে একটি অনুদিত লেখা পড়ুন এখানে- ডিসমিসল্যব

Conclusion:

সুতরাং, ছাত্রদল সভাপতির ভাইরাল বক্তব্যটি একটি এ আই জেনারেটেড ডিপ ফেইক ভিডিও। 

Result: False

Our Sources: 
 Bangla Vision, AI Voice Detector , using a website like this one.


সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান [email protected]। এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us – ফর্মের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন।

image
সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান অথবা whatsapp করুন- +91-9999499044 অথবা আমাদের ইমেল করুন [email protected]​. এই নম্বরে। এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us -র মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন ও ফর্ম ভরতে পারেন।
Newchecker footer logo
Newchecker footer logo
Newchecker footer logo
Newchecker footer logo
About Us

Newchecker.in is an independent fact-checking initiative of NC Media Networks Pvt. Ltd. We welcome our readers to send us claims to fact check. If you believe a story or statement deserves a fact check, or an error has been made with a published fact check

Contact Us: [email protected]

731

Fact checks done

FOLLOW US
imageimageimageimageimageimageimage