সম্প্রতি বিনোদনমূলক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে, ভাইরাল একটি ভিডিওতে দাবি করা হয়, পরীক্ষা দিতে গিয়ে ধর্ষন হয় নিখোঁজ কলেজছাত্রী ইয়াশা মৃধা সুকন্যা।
গত ২৩শে জুন, মা নাজমা ইসলামের সাথে সিদ্ধেশ্বরী কলেজে পরীক্ষা দিতে যান সুকন্যা। দুপুর ১২টায় ইয়াশার মা, তাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকিয়ে দিয়ে কলেজের অভিভাবকদের বসার কক্ষে মেয়ের পরীক্ষা শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন তিনি। পরীক্ষা শেষে ৩টায়, সকল পরীক্ষার্থী ফেরত আসলেও ইয়াশাকে ফেরত আসেনি। বিষয়টি তার মা কলেজের শিক্ষকদের জানানোর পরে, সেদিন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরে রমনা থানায় জিডি করেন। পরের দিন, ২৪সে জুন সেটি মামলায় রূপান্তর হয়। সেই মামলায় ইয়াশার বন্ধু ইশতিয়াককে একমাত্র আসামি করা হয়। রমনা থানা পুলিশ ইশতিয়াক আহমেদ চিশতী ও তার বন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তেমন কোনও তথ্য পায়নি পুলিশ। যদিও, ইশতিয়াক আহমেদ চিশতী এখন কারাগারে।
নিউজচেকার যাচাই করে দেখেছে, পরীক্ষা দিতে গিয়ে নিখোঁজ কলেজছাত্রী ইয়াশা মৃধা সুকন্যা ধর্ষিত হওয়ার দাবিটি মিথ্যা।
Fact Check/ Verification
ভিডিওটি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দেখা যায়, সংবাদটি যমুনা নিউজে সম্প্রচারিত হয়েছিল। ইউটিউবে যমুনা নিউজের চ্যানেলে “ইয়াশা নিখোঁজের ২ মাস” – কী-ওয়ার্ডটি লিখে অনুসন্ধানে, ২০২২ সালের ২১শে আগস্ট সম্প্রচারিত “প্রেমিকের সাথে ঘোরাঘুরির পর নিখোঁজ ইয়াশা, ফিরে পেতে মায়ের আকুতি” শিরেনামে খবরটির সন্ধান পাই। টিকটক ভিডিওটি সন্ধ্যার বাংলাদেশ বুলেটিন থেকে নেয়া হলেও, সংবাদ চ্যানেলটি রাতের বাংলাদেশ বুলেটিনে, ইয়াশার নিখোঁজ হওয়া নিয়ে একই সংবাদ প্রচার হয়। যা সম্পূর্ণ মিলে যায়, টিকটক ভিডিওটির সাথে।
২৩শে আগস্ট, সকালে চ্যানেল ২৪ এর ফেসবুক পেইজ ও অনলাইনে প্রকাশিত হয় নিখোঁজ ইয়াশার সাক্ষাতকার। ‘সাড়ে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে আম্মু আমাকে বিক্রি করে দিচ্ছিল’ শিরোনামে প্রকাশিত ইয়াশার সাক্ষাতকারে থেকে জানা যায়, ইয়াশা নিজেই বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। মায়ের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন এই কলেজ শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর কঠিন কোর্সের তালিকাটি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়
সাক্ষাতকার থেকে জানা যায়, পরীক্ষা না দিয়ে বন্ধুর সাথে বেরিয়ে যায় ইয়াশা। দীর্ঘদিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকে এই কলেজ শিক্ষার্থী। সাক্ষাতকারে ইয়াশা পরীক্ষা দিতে গিয়ে ধর্ষন, এমন কোনও অভিযোগ বা বক্তব্য রাখেননি। সাক্ষাতকারে জানা যায়, পরীক্ষা না দিয়ে বন্ধুর সাথে সারাদিন বাইরেই ছিলেন ইয়াশা, পরে গেন্ডারিয়াতে আরেক বন্ধুর বাড়িতে কিছুক্ষণ বসেন। এরপর ইয়াশা তার প্রেমিককে ফোন করে দেখা করে, তার আর বাড়ি না ফেরা সিদ্ধান্ত জানান। পরের দিন, ২৪শে জুন বিয়ে করেন তারা।
বর্তমানে, ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারে আছেন ইয়াশা।
Conclusion
পরীক্ষা দিতে গিয়ে ধর্ষন হয়নি নিখোঁজ কলেজছাত্রী ইয়াশা মৃধা সুকন্যা। অর্থাৎ, দাবিটি মিথ্যা।
Result: False
Our Sources
সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান [email protected] অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে। এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us -র মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন ও ফর্ম ভরতে পারেন।