Claim- ‘মওলানা সাইদীর জানাজায় বড় ছেলের কান্না,’ ‘মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাইদী’র লাশবাহী গাড়ির এক্সিডেন্ট’
Fact- সাইদীর জানাজা’র দাবিতে ভাইরাল ভিডিওগুলো সঠিক নয়। দুর্ঘটনা হওয়া গাড়িটিও সাইদীর লাশ বহনকারী এ্যাম্বুলেন্স ছিলো না।
‘মওলানা দেলোয়ার হোসেন সাইদী’র জানাজায় বড় ছেলের কান্না’ বা ‘সাইদী হুজুরের এ্যাম্বুলেন্স এর এক্সিডেন্ট’ নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানাবিধ ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে। গত ১৪ই আগস্ট(রবিবার) মওলানা দেলোয়ার হোসেন সাইদী মৃত্যুবরণ করলে’ তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সরব হয়ে ওঠে দেশের বিভিন্ন জায়গা, গণ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো। অপ্রাসঙ্গিক ও মিথ্যা দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়। দেখুন এখানে- টিকটক, টিকটক, টিকটক, টিকটক,টিকটক, টিকটক, টিকটক, টিকটক, টিকটক, টিকটক, টিকটক, টিকটক, টিকটক। পোস্টগুলোর স্ক্রিনশট দেখুন এখানে-
নিউজচেকার-বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে দাবিগুলো মিথ্যা।
Factcheck/Verification
গুগল কি-ওয়ার্ড সার্চ ও রিভার্স ইমেজ সার্চ করে উপরিউক্ত দাবিগুলোর সত্যতা যাচাই করে দেখা যায় ভাইরাল জানাজার ভিডিও, সাইদী হুজুরের বড় ছেলের দাবিতে প্রচারিত ভিডিও এমনকি তার মৃত দেহ ও লাশবাহী ফ্রিজারের এক্সিডেন্ট হওয়ার দাবিটিরও কোন বৈধতা নেই। প্রথমত, সাইদী হুজুরের ছেলের নামের প্রচারিত ভিডিওটি উনার বড় ছেলের নয়। ভিডিওতে থাকা ছেলেটির বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয় যে সে এখনো এক মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত ও তুলনামুলকভাবে কম বয়সী। পক্ষান্তরে, মওলানা দেলোয়ার হোসেন সাইদী’র চার সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান ইতিমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন। পিরোজপুর সাইদী পরিবারের পারিবারিক কবরস্থানে বড় ছেলের পাশেই দাফন করা হয় মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাইদী’র মৃতদেহ। প্রতিবেদন দেখুন এখানে- ঢাকা পোস্ট, বাংলানিউজ২৪। এছাড়া ভাইরাল ভিডিওটিতে থাকা ছেলেটির এই ভিডিওটি একটি ইউটিউব চ্যানেলে দুই মাস আগে আপলোড করা হয়েছিলো। দেখুন এখানে।
প্রতিবেদন থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় মওলানা দেলোয়ার হোসেন সাইদী’র বড় ছেলের দাবিতে প্রচারিত দাবিটি মিথ্যা। এছাড়াও কিছু ভিডিওতে আল্লামা সাইদীর জানাজা দাবিতে কিছু অপ্রাসঙ্গিক জানাজা ও একটি ভিডিওতে স্বাভাবিক নামাজের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। অন্য জানাজার নামাজের ভিডিওর সাথে মুল জানাজার ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে কোন মিল খুজে পাওয়া যায় নি। মুল জানাজার ভিডিও দেখুন এখানে- মাইটিভি , যমুনা টিভি। অপর একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায় মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাইদী’র লাশবাহী ফ্রিজার এ্যাম্বুলেন্সটি একটি এক্সিডেন্ট এর শিকার হন। যাচাই করে দেখা যায় মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাইদী’র লাশবাহী ফ্রিজার গাড়ি ও ভিডিওতে থাকা এক্সিডেন্ট করা গাড়ি দুইটি এক নয়। সাইদী হুজুরকে প্রথমে লতিফা রশিদ ফাউন্ডেশনের লাশবাহী ফ্রিজারে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। পরে জামায়াত কর্মীরা সেই গাড়ি চাকা নষ্ট করে দিলে পরবর্তীতে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হস্পিটালের একটি এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্যদিকে দুর্ঘটনায় কবলিত ফ্রিজার এ্যাম্বুলেন্সটির গায়ে ‘সিনা এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস’ লিখা লক্ষ্য করা যায়।
এছাড়াও সাইদী হুজুরের মরদেহ পিরোজপুর নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে হয়ে যাওয়ার পুর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পড়ুন এখানে- বিবিসি বাংলা। উল্লেখ্য, আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাইদী জামায়েত ইসলামী বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর ও দুইবারের সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুন্যাল আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে আপিল করলে তার আমৃত্যু কারাদণ্ড নিশ্চিত করা হয়। গত রোববার কাশিমপুর কারাগারে আল্লাম সাইদী অসুস্থবোধ করলে তাকে গাজীপুর তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হয়। সেখান সন্ধায় তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হলে সেদিন রাতেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে পিরোজপুরে আল্লামা সাইদীর পারিবারিক কবরস্থানে তার বড় ছেলের পাশেই তাকে দাফন করা হয়।
Conclusion
সুতরাং, মওলানা সাইদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ছড়ানো দাবিগুলো বিভ্রান্তিকর ও অসত্য।
Result: False
Our Sources:
ঢাকা পোস্ট, বাংলানিউজ২৪বিবিসি বাংলামাইটিভি , যমুনা টিভি