Claim: ঢাকার হিন্দু হোস্টেল জামায়াতে ইসলামির আক্রমণ।
Fact: ভাইরাল ভিডিয়োতে আওয়ামী লিগের সমর্থকদের উপর হামলার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। সেই ঘটনাতে সাম্প্রদায়ির রং লাগিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে।
কোটা আন্দোলনকে ঘিরে উত্তাল বাংলাদেশ। বিবিসি বাংলার খবর অনুযায়ী, গত কয়েকদিনে কেবলমাত্র ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই ৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং গত চারদিন ধরে দেশজুড়ে চলছে কারফিউ। সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে আসছে আন্দোলন সম্পর্কিত একের পর এক নারকীয় ছবি ও ভিডিয়ো।
এই পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে আরও একটি ভয়ানক ভিডিয়ো যেখানে একটি বহুতল থেকে একের পর এক মানুষকে ঝাঁপ দিতে দেখা যাচ্ছে এবং বেশ কয়েকজন কার্নিশ ধরে ঝুলছে। ভিডিয়োটি ফেসবুকে পোস্ট করে অনেকেই লিখেছেন, “হিন্দু হোস্টেল ঢাকা তে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আক্রমণ এ, কিভাবে হিন্দু ছাত্রগুলো কার্নিশ ধরে ঝুলছে দেখুন । কতজন উপর থেকে পড়ে গেল দেখুন ।বেচেঁ আছে না মরে গেছে,ভগবান জানেন।”
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ টিপ লাইন নম্বরেও WhatsApp Tip Line (9999499044) বেশ কয়েকটি একই পোস্ট আমরা পেয়েছিলাম।
Fact Check/ Verification
ভাইরাল ভিডিয়োটির একটি কি-ফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে দেখা যায়, গত ১৭ জুলাই Sabiwa Story নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে একই ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছিল। যার সঙ্গে লেখা ছিল, “ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পাঁচতলা ছাদের উপরে উঠে ছাত্রদের হামলা করে”
সেই সূত্র ধরে ইন্টারনেটে সার্চ করলে দেখা যায়, ১৬ জুলাই ভিডিয়োটি নিজেদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করেছিল Kalbela News। ভিডিয়োর সঙ্গে লেখা ছিল, “চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পাঁচ তলার ছাদ থেকে ফে’লে দেওয়ার দৃ’শ্য”
এছাড়া Kaler Kantho ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে, বাংলাদেশের চট্টগ্রামের মুরাদনগরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একটি বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে ১৫ জনকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করে। চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের প্রাক্তন সভাপতি মাহমুদুল করিম কালের কণ্ঠকে জানান, “আমাদের চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজের শতাধিক নেতাকর্মী মুরাদপুরের ওই ভবনে আশ্রয় নিয়েছিল। কিছুক্ষণ পর সেখানে ঢুকে শিবির ও ছাত্রদলের ক্যাডাররা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর নারকীয় হামলা চালিয়েছে। ১৪-১৫ জনকে ভবন থেকে ফেলে দেয়। অনেকে কার্নিশে লুকিয়ে থেকেও রক্ষা পায়নি। তাদের কারো হাত, কারো পা, কারো কোমর ভেঙে গেছে।”
Desh Rupantor-এর প্রতিবেদন থেকে আহতদের নাম জানা যায়। তাঁরা হলেন- আব্দুলল্লাহ আল সাইমুন, ওয়াহিদুল রহমান সুজন, ইরফানুল আলম, জাহেদ অভি, মেহরাজ সিদ্দিকী পাভেল, জাবেদ ইকবাল।
অন্যান্য বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম- Rising bd, Dhaka Post-এর ওয়েবসাইটেও খবরটি প্রকাশিত হয়েছিল।
এরপর দেখা যায় যে, বাংলাদেশের শাসকদল আওয়ামী লিগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ১৭ জুলাই ঘটনা সংক্রান্ত একটি পোস্ট করা হয়েছিল।
উপরের প্রতিবেদনে আহত ছাত্রদের নাম দেওয়া হয়েছে। সেখানে হিন্দু ধর্মাবলম্বী কোনও ছাত্রের নাম পাওয়া যায়নি। কোনও সংবাদমাধ্যম ও আওয়ামী লিগের তরফে বলা হয়নি যে হিন্দুদের উপর আক্রমণ হয়েছে। এছাড়া ইন্টারনেটে সার্চ করেও ঢাকায় কোনও হিন্দু হোস্টেলের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
Conclusion
সুতরাং এখান থেকেই স্পষ্ট যে, ভাইরাল ভিডিয়োতে আওয়ামী লিগের সমর্থকদের উপর হামলার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। সেই ঘটনাতে সাম্প্রদায়ির রং লাগিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে।
Result: Partly False
Sources
Video by Kalbela News
Report by Kaler Kantho
Report by Desh Rupantor
Report by Rising bd, Dhaka Post